ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো ডিগ্রি নিয়ে বেরিয়েই একজন শিক্ষার্থী বলছেন, আমাকে চাকরি দিন। কিন্তু এটা বলছেন না যে আমাকে ১০ হাজার ডলার দিন, আমি নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে তুলব। তাঁর ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ তিনি তুলে দিচ্ছেন আরেকজনের হাতে। এটা আধুনিক দাসত্ব - ড. মুহাম্মদ ইউনূস

---

প্রত্যেক মানুষই উদ্যোক্তা হয়ে জন্ম নেন। কিন্তু সমাজ তাকে এমনভাবে মগজধোলাই করে যে তিনি চাকরি খুঁজতে বাধ্য হন। সে জন্য বেকারত্ব দেখা দেয় - ড. মুহাম্মদ ইউনূস

---

আমরা আমাদের ছাত্রদের চাকরি এবং কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত করি, কিন্তু তারা কী ধরনের বিশ্ব তৈরি করবে সে সম্পর্কে আমরা তাদের ব্যক্তি হিসেবে ভাবতে শেখাই না।

---

আজও আমরা দারিদ্র্য ইস্যুতে গুরুত্ব দিই না, কারণ ক্ষমতাবানরা তুলনামূলকভাবে এর দ্বারা অস্পৃশ্য থাকে। বেশিরভাগ মানুষ এই বলে নিজেদেরকে এই সমস্যা থেকে দূরে রাখে যে যদি দরিদ্ররা কঠোর পরিশ্রম করে তবে তারা দরিদ্র হবে না।

---

ভয় ভাঙ্গার প্রক্রিয়াটি সবসময়ই আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এবং আমার মহিলা কর্মীদের যত্নশীল কাজ এবং মৃদু কণ্ঠের দ্বারা এটি সহজ করা হয়েছিল।

---

দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যের পর্যায়ে থাকবে—এমন একটি বিশ্বের কথা কল্পনা করো। দেখবে একসময় তা সত্যিই হয়ে যাবে - ড. মুহাম্মদ ইউনূস

---

খুব ছোট আকারে শুরু করুন বড় কিছু তৈরির কল্পনা করুন কিন্তু শুরু করুন খুব ছোট আকারে। যতটা ছোট আকারে সম্ভব হয় শুরু করুন, আপনার এই ছোট পদক্ষেপ বড় কিছুর দিকে আপনাকে ধাবিত করবে। সুতরাং ছোট ছোট পদক্ষেপে পরিবর্তনের পথে নিজেকে চালিত করুন। এটা করাটা কঠিন নয় খুবই সহজ।

---

চাকরিদাতার মতো আচরণ করুন কে আপনাকে বলেছে চাকরির কথা? আপনার শিক্ষক বলেছে না টেক্সট বইয়ে চাকরির কথা লেখা আছে? চাকরির কথা ভুলে যান। চাকরির চিন্তা পুরাতন আমলের ধ্যান ধারণা। এটা থেকে বের হয়ে আসুন। নিজেকে বার বার বলুন আমি চাকরি প্রার্থী নই, আমি চাকরি দাতা এবং সেই মোতাবেক চিন্তা আর আচরণ করুন। আপনি দেখবেন আপনার কাজে অসাধারণ পরিবর্তন এসেছে এবং পরিবর্তনের সুচনা হয়েছে আপনার মাথা আর চিন্তা চেতনা থেকে। আমরা সবাই জন্ম থেকেই উদ্যোক্তা এবং সবার মধ্যে উদ্যোক্তা হবার মতো যোগ্যতাও আছে। এটা আমাদের ডিনএতে আছে এবং এই ক্ষমতা ব্যবহার করেই মানুষেরা এত বছর ধরে এই পৃথিবীতে বসবাস করছে। আমরা যখন গুহাতে থাকতাম তখন আমরা এক গুহা থেকে আরেক গুহাতে চাকরি খুজতাম না। মানুষ জীবনধারণের জন্য উদ্যমী আর সমস্যা সমাধানকারী ছিল, মানুষ জন্ম নেয়নি অন্যের হয়ে কাজ করার জন্য ভুলক্রমে আমাদেরকে চাকরি প্রার্থী বানিয়ে দেয়া হয়েছে। যখনি আপনি চাকরি করা শুরু করেন তখনি আপনি আপনার বিশাল সৃজনশীল ক্ষমতাকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে অনেক কম বানিয়ে ফেললেন।

---

আমরা ভারত থেকে ডিম কিনি। যেদিন আমরা ভারতে ডিম বিক্রি করতে পারবো সেইদিন আমাদের অর্থনীতির চেহার পাল্টে যাবে - ড. মুহাম্মদ ইউনূস

---

পৃথিবীর উন্নয়নের জন্য কাজ করুন আমরা আজকে যেই পৃথিবী কল্পনায় দেখতে পাই সেই পৃথিবী তৈরির জন্য কাজ করা উচিত। আমি যেমন আমার কল্পনায় একটি দারিদ্রমুক্ত পৃথিবী দেখতে পাই যেখানে একটি মানুষও দরিদ্র নয়। যখন আমি সেটা করতে সমর্থ হবো তখন জায়গায় জায়গায় জাদুঘর তৈরী করা হবে, এবং যেখানে মানুষ তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে দেখতে যাবে দারিদ্রতাকে। আমি এমন একটি পৃথিবী কল্পনা করি যেখানে কাজ করার যোগ্য কেউ বেকার থাকবে না, এবং ছাত্ররা থিসিস লিখবে আগেকার দিনে দারিদ্রতা কেন ছিল তা নিয়ে। কেউ রাষ্ট্রের দেয়া ভাতার উপর নির্ভরশীল থাকবে না, কারণ সবাই যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে।

---