#Quote

লােকশিল্প বাস্তববিরােধী নয়, বাস্তব পরিপক্ক পরােক্ষ (আবস্ট্রাক্ট ফর্ম) আসলে তার লােকায়িত মুক্তিই।

Facebook
Twitter
More Quotes by Bishnu Dey
শান্তি অন্তরের ইন্দ্রিয়কে, বাহিরের ইন্দ্রিয়কে উদার প্রসারিত করিয়া ধরে, আর এইজন্যই সেখানে আসিয়া ধরা দেয় অন্তরের অসীমের স্বাচ্ছন্দ্য। শান্তির মধ্যেই গাঢ় হইয়া জমিয়া উঠে একটা আত্মস্থ সামক্ষ্য শান্তি স্বচ্ছতা দৃষ্টিকে লইয়া চলে গভীর হইতে গভীরে।
শিক্ষার মধ্যে তিনটি স্তর বা ধারা আছে। প্রথম বিষয় অধিকার ও দ্বিতীয়, বৃত্তির চর্চা, আর তৃতীয়, মনের গড়ন ঠিক করা, সামর্থ্য বাড়ান। প্রথম হইতেছে বিশেষ বিশেষ বিদ্যায় পারদর্শী হওয়া, তৎসম্বন্ধে যত তত্ত্ব ও তথ্য আছে তাহা জানা যা আবিষ্কার করা। দ্বিতীয় হইতেছে মনের বিশেষ বিশেষ বৃত্তিকে মাজিয়া ঘষিয়া তীক্ষ্ণ ও পুরিপুষ্ট করিয়া তোলা—যেমন স্মৃতির শক্তি অথবা বিচার-বিতর্কের শক্তি অথবা সাজাইয়া গুজাইয়া ধরিবার শক্তি।
কিন্তু যোগীর ক্ষেত্র আরো বিস্তৃত ও বস্তুগত—কারণ যোগীর প্রয়াস প্রাণে ও দেহে অধ্যাত্মের আলো প্রজ্বলিত করা। কবি এই প্রয়াসের আরম্ভ হতে পারেন। সহায় হতে পারেন কিংবা শেষে জয়ের প্রকাশ বা ঘোষণাও হতে পারেন, কিন্তু কবি যোগীকে সরিয়ে তার স্থান গ্রহণ করতে পারেন না—যোগী হতে গেলে যে কবি হতেই হবে তা নয়।
জন সমুদ্রে নেমেছে জোয়ার, হৃদয় আমার চড়া । চোরাবালি আমি দূর দিগন্তে ডাকি- কোথায় ঘোড়সওয়ার?
সাময়িক আনন্দ ছাড়া আরেক দিক থেকে লােকনৃত্যের সার্থকতা। স্পষ্টতর; সেটা হচ্ছে নৃত্যের রূপশিক্ষার দিক, নতুন নৃত্য-প্রেরণায়। যার প্রভার কার্যকর হবে। বিশেষ করে আজ যখন আমরা জানি। যে শিক্ষায় শরীরের ছন্দশিক্ষার মূল্য প্রথমিক। এই ছন্দশিক্ষায় আমরা যত বেশি লােকনৃত্য দেখতে পারি এবং স্থানকালপাত্র ভেদে ও ক্ষমতানুসারে তার থেকে পাঠ নিতে পারি, ততই লাভ। তাছাড়া, আমরা এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন নিছক সৌন্দর্য দর্শনের। সুযােগ পাব না?
জীবনের ছন্দ এক, শিল্পের ছন্দ আর এক; শিল্পের মধ্যে জীবনকেই যদি মূর্ত করিয়া ধরিতে চাই, তবুও জীবনের গতিভঙ্গীকে হুবহু শিল্পের গতিভঙ্গীর মধ্যে তুলিয়া ধরিতে পারি না। জীবনকে শিল্পের মধ্যে তুলিয়া ধরিতে হইলেই দরকার একটা রূপান্তর পাশ্চাত্যে ইহার নাম দিয়াছে —এই রূপান্তরের অর্থই শিল্পগত সৌন্দর্য।
আবার অন্যদিকে এমন অত্যুক্তিও করা চলে না যে কবি ও যোগী এক ও অভিজ্ঞ কাব্যরচনা ও যোগ-সাধনায় পার্থক্য নেই, কবির তবুও হল বাঙ্ময় জগৎ এবং সেটি মানসলোকের অন্তর্ভুক্ত। কবির যে অন্তরাত্মার জ্যোতি তা এই বাঙ্ময় মানসলোককে ভাস্বর, অধ্যাত্মপ্রবণ করে তোলে।
শব্দের অর্থের ছন্দের স্বরের দ্বন্দ্বে রূপান্তর চাই, শব্দে শব্দে আপতিক ভেদাভেদ অতিক্রমে কবিতায় কবিতায় স্বাতন্ত্রের অনন্য ও অন্যোন্যের যােগাযােগে অর্থের বিন্যাস।
অঙ্গে রাখিনা কারোই অঙ্গিকার? চাঁদের আলোয় চাঁচর বালির চড়া । এখানে কখনো বাসর হয় না গড়া? মৃগতৃষ্ণিকা দূর দিগন্তে ডাকি? আত্মাহুতি কি চিরকাল থাকে বাকি?
বিষয় হিসাবে, আমরা চাহিতেছি বটে জ্ঞান আরও জ্ঞান, কিন্তু জ্ঞানের বস্তু অপেক্ষা আমাদিগকে বেশি অনুপ্রাণিত করিতেছে অনুসন্ধান, অনুসন্ধানের আবেগ জ্ঞানের সাধক হইয়াও, এই উপলব্ধিটি, আমরা কখনোও ছাড়াইয়া উঠিতে পারি না যে, সকল জ্ঞানই পরিশেষে আপেক্ষিক, সকল জ্ঞানই সাময়িক এবং দেশিক ; তবুও চাহিয়াছি সেই জ্ঞান, একটা চির অতৃপ্তির জের টানিয়া ক্রমাগত চলিয়াছি এক জ্ঞান হইতে আরেক জ্ঞানে। জানি চিরন্তন অনন্ত সত্য কিছু নাই—আছে আজকার এখনকার সত্য, তাহার স্থানে আসিবে কালিকার ওখানকার সত্য—এইরকম সত্যের ক্ষণিকের কাহিনি হইল আর সত্য।